পায়ের প্লাস্টার কতদিন রাখতে হয়? কারণ ও সঠিক চিকিৎসা নির্দেশিকা

পায়ের হাড় ভাঙা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি পরিচিত সমস্যা। সাধারণত দুর্ঘটনা, খেলাধুলার আঘাত, বা হাঁটতে গিয়ে পা পিছলে পড়ার ফলে পা ভাঙতে পারে। এছাড়া বয়সের কারণে হাড় দুর্বল হয়ে পড়া, ক্যালসিয়ামের অভাব, বা অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগও হাড় ভাঙার ঝুঁকি বাড়ায়। অনেক সময় ভারি কাজ করার ফলে অতিরিক্ত চাপ বা স্ট্রেস ফ্র্যাকচার দেখা দেয়, যা হাড় ভাঙার একটি কারণ। শিশুদের ক্ষেত্রে হাড় নরম হওয়ায় সামান্য আঘাতেই তা ভেঙে যেতে পারে।

পা ভাঙলে চিকিৎসকের পরামর্শে প্লাস্টার ব্যবহার করা হয়, যা হাড়কে স্থির রাখে এবং সঠিকভাবে জোড়া লাগতে সাহায্য করে। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা পা ভাঙ্গার পর যে প্লাস্টার করা হয় সেই সম্পর্কিত সকল জানা-অজানা তথ্য জেনে নেব

পায়ের প্লাস্টার কতদিন রাখতে হয়?

পায়ের প্লাস্টার কতদিন রাখতে হয়? কারণ ও সঠিক চিকিৎসা নির্দেশিকা

পায়ের প্লাস্টার কতদিন রাখতে হবে, তা নির্ভর করে আঘাতের প্রকার, হাড় ভাঙার জায়গা, এবং চিকিৎসকের পরামর্শের উপর। প্লাস্টারের মূল কাজ হলো ভাঙা হাড়কে স্থির রাখা যাতে এটি সঠিকভাবে জোড়া লাগতে পারে। তবে এই সময়কাল ভিন্ন হতে পারে রোগীর বয়স, ভাঙনের জটিলতা এবং চিকিৎসা পদ্ধতির উপর।

প্লাস্টার রাখার সময়সীমা

প্লাস্টার রাখার সময়সীমা অনেক বিষয়ের উপর নির্ভর করে এর মধ্যে হাড় ভাঙ্গার ধরন আর বাংলার অবস্থান এবং রোগীর বয়স উল্লেখযোগ্য এরপর আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে চিকিৎসা পদ্ধতি নিচে সকল বিষয়গুলো বিস্তারিত ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে
  1. হাড় ভাঙার ধরন:

    • সাধারণ হাড় ভাঙা (Simple Fracture): এই ধরনের ভাঙনে সাধারণত ৪-৬ সপ্তাহ প্লাস্টার রাখা হয়।
    • জটিল হাড় ভাঙা (Complex Fracture): জটিল ভাঙনের ক্ষেত্রে ৮-১২ সপ্তাহ পর্যন্ত প্লাস্টার রাখতে হতে পারে।
  2. ভাঙার অবস্থান:

    • পায়ের নিচের অংশের হাড় ভাঙলে প্লাস্টার রাখার সময় ৬-৮ সপ্তাহ হতে পারে।
    • গোড়ালির ভাঙনের ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি সময় নিতে পারে।
  3. রোগীর বয়স:

    শিশুদের হাড় দ্রুত সারে, তাই তাদের ক্ষেত্রে সাধারণত ৩-৫ সপ্তাহেই প্লাস্টার খুলে ফেলা যায়। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এই সময়কাল দীর্ঘতর হয়।

  4. চিকিৎসা পদ্ধতি:
    যদি অস্ত্রোপচার (সার্জারি) করতে হয়, তবে প্লাস্টার রাখার সময় আরও বাড়তে পারে।

প্লাস্টার থাকা অবস্থায় করণীয়

  1. পায়ের নড়াচড়া কমাতে হবে:
    প্লাস্টার থাকা অবস্থায় পায়ের নড়াচড়া কমাতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওজন দেওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।

  2. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা:
    প্লাস্টারকে ভিজতে দেওয়া যাবে না। ভিজে গেলে এটি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। প্রয়োজনে বিশেষ কভার ব্যবহার করুন।

  3. চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে চলা:
    চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে এক্স-রে করানো এবং ফলো-আপ মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ।

প্লাস্টার খোলার পর করণীয়

  • প্লাস্টার খোলার পর পায়ের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ফিরে পেতে ফিজিওথেরাপি বা পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
  • এই সময়ে হাড়ের শক্তি বাড়াতে প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

উপসংহার

পায়ের প্লাস্টার রাখার সময়সীমা ব্যক্তি ও ভাঙনের ধরন অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। তাই চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার পায়ের কোনো সমস্যা থেকে থাকে, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url